অধ্যক্ষ নিয়োগে ঘুষ দাবি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগঅধ্যক্ষ নিয়োগে ঘুষ দাবি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ

অধ্যক্ষ নিয়োগে ঘুষ দাবি: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ
📍 news.divpo.com বিশেষ প্রতিবেদন
✍️ লেখক: সুমন চৌধুরী

বাংলাদেশের শিক্ষা প্রশাসনে আবারও উঠেছে ঘুষ, অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের গম্ভীর অভিযোগ। এবার অভিযুক্ত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ। বিস্ময়কর তথ্য তুলে ধরে ঢাকা সিটি কলেজের অধ্যাপক কাজি নেয়ামুল হক দাবি করেছেন, তাঁকে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দিতে ৫০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করা হয়েছে উপাচার্যের পক্ষ থেকে।

🔍 ঘটনার বিবরণ: কীভাবে সামনে এলো অভিযোগ?

১৩ জুন ২০২৫, ঢাকা সিটি কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য অনুষ্ঠিত লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করেন অধ্যাপক কাজি নেয়ামুল হক। ১৪ জুন কলেজ গভর্নিং বডির সভায় তাঁকে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগের সুপারিশ পাঠানো হয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদনের জন্য

কিন্তু এরপর থেকেই শুরু হয় বিলম্ব, গড়িমসি এবং গোপন অস্বচ্ছতা।

অধ্যাপক নেয়ামুল হক অভিযোগ করেন, ৪ জুলাই শুক্রবার, সন্ধ্যায় তাঁকে ডেকে পাঠানো হয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ধানমন্ডি অফিসে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ভিসির ব্যক্তিগত সহকারী (PS) আমিনুল আক্তার। তাঁর সঙ্গেও ছিলেন তিন সহকর্মী—ফকির মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ, বাদশাহ আলমগীর ও জাহাঙ্গীর হোসেন

এই সাক্ষাতে আমিনুল আক্তার ভিসির পক্ষে ৫০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন বলে দাবি করেন নেয়ামুল হক।

“আমি সরাসরি এ দাবি প্রত্যাখ্যান করেছি,” — বলছিলেন অধ্যাপক নেয়ামুল হক মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে।

অধ্যক্ষ নিয়োগে ঘুষ দাবি  জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ
অধ্যক্ষ নিয়োগে ঘুষ দাবি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ

⚖️ ভিসির প্রতিক্রিয়া: ‘পুরো অভিযোগই ভুয়া’

অভিযোগের জবাবে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহ বিষয়টি ‘ফেইক অভিযোগ ও মিথ্যা সংবাদ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন,

“পুরাই একটা ফেইক অভিযোগ ও নিউজ।”

তবে অভিযোগকারী পক্ষ বলছে, তাঁরা শুধু অভিযোগ করছেন না—প্রমাণ সহকারে বিষয়টি দুদক, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও গণমাধ্যমে তুলে ধরবেন

🧾 পূর্বের ঘুষ চাওয়ার অভিযোগও সামনে আনলেন নেয়ামুল হক

অধ্যাপক নেয়ামুল হক বলেন, ভিসি আমানুল্লাহ উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পরও সিটি কলেজে দাওয়াত দেওয়ার সময় একইভাবে তাঁর পিএস মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেছিলেন। ফলে এটি বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়, বরং পুনরাবৃত্তি ঘটছে পূর্বের দুর্নীতির

🏛️ রাজনৈতিক প্রভাব ও গভর্নিং বডি পুনর্গঠন নিয়ে অভিযোগ

কাজি নেয়ামুল হকের অভিযোগ অনুযায়ী, কলেজের গভর্নিং বডি ও শিক্ষক সমাজ ভিসির কিছু অসাংবিধানিক ও অগণতান্ত্রিক পদক্ষেপের প্রতিবাদ করলে, ভিসি বিরাগভাজন হন। এর প্রতিক্রিয়ায় তিনি গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান ও বিদ্যোৎসাহী সদস্যদের পরিবর্তন করে নিজের অনুগতদের নিয়োগ দেন

তিনি আরও উল্লেখ করেন,

“২০০৫ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের সময় আন্দোলনরত ছাত্রদের দাবিতে অধ্যক্ষ বেদার উদ্দিন পদত্যাগ করেন। সেই সময় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ঘনিষ্ঠ ছয়জন শিক্ষককে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়। আজ সেই ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসনে তৎপর ভিসি আমানুল্লাহ।”

🧠 বিশ্লেষণ: একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নাকি দুর্নীতির বলি?

ঢাকা সিটি কলেজ দেশের একটি অন্যতম ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ নিয়োগ ঘিরে ঘুষ, ক্ষমতার অপব্যবহার, রাজনৈতিক পুনর্বাসন ও অনৈতিক হস্তক্ষেপ—সব মিলিয়ে এটি শুধু একটি ব্যক্তির নয়, বরং সমগ্র শিক্ষাব্যবস্থার বিশ্বাসযোগ্যতার উপর আঘাত

বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি অভিযোগ সত্য হয়, তাহলে এটি বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার এক ভয়াবহ দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে। একইসঙ্গে, এটি প্রমাণ করে যে যোগ্যতা নয়, টাকা-পয়সা ও রাজনৈতিক সম্পর্কই নিয়োগের মূল মাপকাঠি হয়ে উঠছে

🏛️ প্রশ্নগুলোর উত্তর কে দেবে?

  1. যদি নিয়োগে মেধায় প্রথম ব্যক্তি নিয়োগ না পান, তাহলে পরীক্ষার অর্থ কী?
  2. কেন একজন উপাচার্যের পিএস পদার্থিক সাক্ষাৎকারে ঘুষ দাবি করতে পারেন?
  3. কেন এত গুরুত্বপূর্ণ নিয়োগে স্বচ্ছতা ও জনসম্মুখে জবাবদিহিতা নেই?

📢 জাতীয় তদন্ত দাবি

শিক্ষাবিদ ও সচেতন মহল মনে করছেন, বিষয়টি শুধু পত্রিকায় প্রকাশ করলেই চলবে না—সরকার, দুদক এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত করতে হবে।

যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তাহলে ভিসির অপসারণ ও বিচার নিশ্চিত করতে হবে—অন্যথায় বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষায় যোগ্যতার পরিবর্তে দুর্নীতি ও দালালতন্ত্রই হয়ে উঠবে ভবিষ্যতের মানদণ্ড।

📌 উপসংহার: এটি কি শিক্ষা নাকি পণ্যের বাজার?

যখন একটি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদের জন্য ৫০ লাখ টাকার ঘুষ দাবি করা হয়, তখন প্রশ্ন জাগে—এই সমাজে যোগ্যতা, সততা ও মেধার জায়গা কোথায়? জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি প্রতিষ্ঠান যদি এমন অনিয়মে জড়ায়, তবে এর প্রতিক্রিয়া কেবল একটি কলেজে নয়—সমগ্র দেশব্যাপী শিক্ষার প্রতি মানুষের আস্থা হারাবে।

এখন সময় এসেছে আলোচনার নয়, প্রতিকারমূলক পদক্ষেপের
তদন্ত, বিচারের মাধ্যমে এই দুর্নীতির শেকড় উপড়ে ফেলে একটি স্বচ্ছ, মেধাভিত্তিক ও নৈতিক শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলতেই হবে।

📢 শিক্ষাসহ আরও গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে ভিজিট করুন:
🌐 www.news.divpo.com
📺 আমাদের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন – সবার আগে সত্য খবর পেতে।

আরো দেখুনঃ কলেজের নতুন নাম ব্যবহার সংক্রান্ত নির্দেশনা

শিক্ষকদের জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণের আহ্বান

এসএসসি পরীক্ষার ফল দেখবেন যেভাবে

অনলাইন ক্যারিয়ার গঠন সহজ পদ্ধতি দেখুন 

এইচএসসির আইসিটি প্রশ্নে দুটি ভুল, সবাইকে নম্বর দেয়ার দাবি

উত্তাল সমুদ্রে নেমে ভেসে গেলেন চবির ৩ শিক্ষার্থী

নজিরবিহীন অনিয়মে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামীণ জনস্বাস্থ্য প্রকল্প 2025

 

অধ্যক্ষ নিয়োগে ঘুষ দাবি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ অধ্যক্ষ নিয়োগে ঘুষ দাবি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ অধ্যক্ষ নিয়োগে ঘুষ দাবি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ অধ্যক্ষ নিয়োগে ঘুষ দাবি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ অধ্যক্ষ নিয়োগে ঘুষ দাবি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ অধ্যক্ষ নিয়োগে ঘুষ দাবি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ

By admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *