শিক্ষকদের জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণের আহ্বান
সাবেক বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সুসংগৃহীত অর্থ সম্পদের সদ্ব্যবহার করে অবসরপ্রাপ্ত ও কর্মরত সকল প্রাথমিক শিক্ষকের স্বাস্থ্যসেবায় বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণের দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। সোমবার (৭ জুলাই) দৈনিক শিক্ষাডটকমকে প্রেরিত এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, “আমাদের সার্বিক চেষ্টা হওয়া উচিত দেশের প্রাথমিক শিক্ষক সমাজের প্রতিটি সদস্যকে মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা—তা যাতে আর্থিক সংকটের কারণে কোনো শিক্ষকের হাতছাড়া না হয়।”

১. সাবেক সমিতির আর্থিক সম্পদের বর্তমান চিত্র
-
মিরপুর আদর্শ পরিকল্পনায় ১৩ নম্বর সেকশনের ১০ কাঠা জমি মেট্রোরেল প্রকল্পের অধিগ্রহণে বিক্রি হয়েছে। ওই প্রক্রিয়ায় জমির মূল্যায়ন অনুযায়ী সংগৃহীত অনুদান ও ক্ষতিপূরণ বাবদ মোট ১২ কোটি ৫৩ লাখ টাকা জমা পড়েছে।
-
সাবেক সমিতির ব্যাংক হিসাবেও সুদ হিসাব করে প্রায় ৪০ লাখ টাকা রয়েছে, যা দীর্ঘদিন প্রচারণামূলক ব্যবস্থাপনার অভাবে নিষ্ক্রিয় রয়েছে।
-
এই দুটি অর্থপুকুর দীর্ঘ দিন উদাসীন ও বিভক্তির শিকার—সম্পদগুলো এখন পর্যন্ত শিক্ষক কল্যাণে কাজে লাগানো হয়নি।
২. বিশেষায়িত হাসপাতালের পরিকল্পনা ও কার্যক্রম
নেতৃবৃন্দের প্রস্তাবের মূল দিকসমূহ:
-
স্থান: ঢাকা মহানগরের কেন্দ্রীয় এলাকায়—মিরপুরের জমি হওয়ায় সুবিধাজনক পরিবহন ও জরুরি সেবা সহজলভ্য হবে।
-
সুবিধাসমূহ: পেডিয়াট্রিক, গাইনোকোলজি, কার্ডিওলজি, অর্কোপেডিক্স, ইমার্জেন্সি রুম, ডিজিটাল রেডিওলজি, ল্যাবরেটরি ও ফার্মেসি—সহ একবিন্দু স্বাস্থ্যসেবা আবাস।
-
অর্থায়ন: সাবেক সমিতির অঙ্কিত তহবিলের পাশাপাশি সরকারি অনুদান, শিক্ষক কল্যাণ তহবিল ও স্বেচ্ছার অর্থদান।
-
পরিচালনা: একটি নির্বাহী পরিষদ গঠন, যেখানে থাকবে অবসরপ্রাপ্ত ও সক্রিয় শিক্ষক প্রতিনিধির সমন্বয়।
৩. ঐক্যবদ্ধ সংহতির আহ্বান
বিবৃতিতে উদ্যোক্তারা বলেন,
“শিক্ষক সমাজের অধিকার রক্ষায় ও তাদের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের একসাথে কাজ করতে হবে। সম্পদ বিভাজন নয়, সুশাসন ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে যেন তা প্রত্যাবর্তন করে শিক্ষক ভাই-বোনদের কল্যাণে ব্যবহার হয়।”
৪. প্রধান বিবৃতিদাতারা
সভাপতি আছমা খানম
সহ সভাপতি মো. কামাল হোসেন
সিনিয়র সহ সভাপতি (মহিলা) শিপ্রা সরকার
সিনিয়র সহ সভাপতি লুতফুন নাহার রনি
সহ সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ইউনুস আলী
সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান
উপ মহিলা সম্পাদক মোসা. খাদিজা বেগম
…এবং অন্যান্য সহসভাপতি, যুগ্ম ও সাংগঠনিক সম্পাদকবৃন্দসহ প্রায় ২০ জন নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
৫. সামনের করণীয়
-
মার্চভনিত “স্বাস্থ্যসেবা অধিকার আইন”–এর আওতায় এই হাসপাতালকে সরকারি স্বীকৃতি এবং প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য বিশেষ ভর্তুকি নিশ্চিত করতে হবে।
-
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, শিক্ষা বোর্ড ও গণমাধ্যমের সহযোগিতায় দ্রুত নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হবে।
-
এক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন, উন্নয়ন সংস্থা ও শিক্ষক কল্যাণ সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় গড়ে তুলতে হবে।
দীর্ঘমেয়াদী এই স্বাস্থ্য প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দেশের চার—and—পাঁচ লাখ প্রাথমিক শিক্ষকসহ তাদের পরিবারের সদস্যরা উচ্চমানের চিকিৎসা সেবায় স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন—এটাই নেতৃবৃন্দের প্রত্যাশা।

